ফেসবুক লাইভে শাহজান ইসলামের বিতর্কিত মন্তব্য, কংগ্রেসের ভাবমূর্তিতে আঘাত

3 Min Read

কংগ্রেস নেতা শাহজান ইসলামের কদর্য ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতাদের আক্রমণ, রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া

নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন কংগ্রেসের সংখ্যালঘু নেতা শাহজান ইসলাম। রবিবার সন্ধ্যায় ফেসবুক লাইভে এসে তিনি মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপির শীর্ষ সংখ্যালঘু নেতাদের বিরুদ্ধে কদর্য ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন। ঈদের দুই দিনের ঘটনা নিয়ে সরকার ও পুলিশের সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি এমন অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেছেন, যা রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে, এমনকি তার বাড়িতে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে।

কংগ্রেস সভাপতি আশিস সাহা শাহজানের এই বক্তব্যকে দলীয়ভাবে সমর্থন করেননি। তবে, গুঞ্জন রয়েছে যে দলের একজন হেভিওয়েট নেতা তাকে প্রচ্ছন্ন মদত দিচ্ছেন। একটি মহলের দাবি, একজন সুযোগসন্ধানী কংগ্রেস বিধায়ক শাহজানকে এই ধরনের কার্যকলাপে উৎসাহিত করছেন। বিজেপির পক্ষ থেকে শাহজানের অতীতের ফাইল খুলে দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, শাহজানের বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধী ও ইন্দিরা গান্ধীর ছবিতে জুতোপেটার অভিযোগে ২০১৫ সালে কংগ্রেস থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। এছাড়াও, ২০১৫ সালে কংগ্রেসের রাজ্য অফিসে ভাঙচুর ও দলীয় নেতাদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি তথা বর্তমান বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছিলেন।

বিজেপি সদর শহর অঞ্চলের সভাপতি অসীম ভট্টাচার্য বলেছেন, “শাহজান ইসলাম মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এবং বিজেপির সংখ্যালঘু নেতাদের যে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি পুলিশকেও অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেছেন এবং সমাজবিরোধী কাজে জড়িত।” তিনি আরও জানান, শাহজানের বিরুদ্ধে বিজেপির মিছিলে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা একজন বিশিষ্ট ম্যাক্সিলো ফেসিয়াল সার্জন হিসেবে রাজ্যে সুপরিচিত। তার পদের মর্যাদা এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচারকে শাহজানের বক্তব্য আঘাত করেছে বলে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মহল মনে করছে। তারা বলছেন, একসময় শচীন সিং, সুখময় সেনগুপ্তর মতো নেতারা কংগ্রেসকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শাহজানের মতো কর্মীদের কারণে দলটি আজ সাইনবোর্ডসর্বস্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিজেপির দাবি, কংগ্রেস রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। শাহজানের মন্তব্যের পর কংগ্রেস ব্যাকফুটে চলে গেছে। সমালোচকরা বলছেন, অভিযোগ থাকলে পুলিশ বা আদালতের দ্বারস্থ হওয়া উচিত, কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে এভাবে অশ্লীল আক্রমণ কংগ্রেসের “নোংরা সংস্কৃতি”র প্রতিফলন। এই ঘটনা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version