নিউজ ডেস্ক || বাংলাদেশ হাইকোর্ট আজ ইসকনের প্রাক্তন নেতা ও হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ছয় মাসের কারাবাসের পর জামিন মঞ্জুর করেছে। এই রায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উত্তেজনা কমাতে এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ শুনানির পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চিন্ময়ের আইনজীবী প্রহ্লাদ দেবনাথ জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যদি হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে, তবে তিনি শীঘ্রই কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করেছিল। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং জাতীয় পতাকার অসম্মানের অভিযোগ আনা হয়, যা আন্তর্জাতিক মহলে “বিচারিক হয়রানি” হিসেবে ব্যাপক নিন্দিত হয়েছে। তাঁর আইনজীবী অপুর্ব কুমার ভট্টাচার্য জানান, গুরুতর অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বিচার শুরু না করেই দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। জেলে তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি। গত ১১ ডিসেম্বর তাঁর জামিনের আবেদন পুনরায় খারিজ হয়েছিল।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে বহু আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর গ্রেপ্তার বাংলাদেশ ও ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল। ইসকনসহ বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন তাঁর মুক্তির জন্য আন্দোলন করে। ভারত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর কট্টরপন্থীদের আক্রমণ বৃদ্ধি পায়, যার অংশ হিসেবে চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারকে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। হাইকোর্টের এই জামিন আদেশকে অনেকে ন্যায়বিচারের পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছেন।