বিচারপতি ভূষণ রামকৃষ্ণ গবাই ভারতের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ

2 Min Read

নিউজ ডেস্ক || ভারতের বিচার ব্যবস্থায় এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলো দেশ। বিচারপতি ভূষণ রামকৃষ্ণ গবাই দেশের ৫২তম প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। এই শপথের মাধ্যমে তিনি ভারতের ইতিহাসে প্রথম বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং তফসিলি জাতি থেকে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে দেশের সর্বোচ্চ বিচারিক পদে অধিষ্ঠিত হলেন। এই ঘটনা শুধু ঐতিহাসিক নয়, বরং ভারতের সংবিধানিক ন্যায়নীতি ও বিচার ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তিমূলক মূল্যবোধের প্রতীক।
বিচারপতি গবাই আগামী ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর রায়, নেতৃত্ব এবং বিচার বিভাগে অবদান এখন থেকে সারা দেশের নজরে থাকবে। সুপ্রিম কোর্টে তাঁর কার্যকালে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বেঞ্চে অংশ নিয়েছেন, যেগুলি যুগান্তকারী রায় দিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বুলডোজার নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বৈধতা, নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প খারিজ এবং ২০১৬ সালের নোট বাতিলের সমর্থন।
তিনি নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আম আদমি পার্টির নেতা মনীশ সিসোদিয়াকে মানি লন্ডারিং মামলায় জামিন প্রদান করে, যা পরবর্তীতে অন্য অভিযুক্তদের জামিনের ভিত্তি হয়। এছাড়া, রাহুল গান্ধীর মানহানি মামলায় সাজা স্থগিত এবং নাগরিক অধিকার কর্মী তিস্তা সেটালভাদকে জামিন প্রদানের মতো গুরুত্বপূর্ণ রায়ও তাঁর বেঞ্চ থেকে এসেছে।
১৯৬০ সালের ২৪ নভেম্বর অমরাবতীতে জন্মগ্রহণকারী বিচারপতি গবাই ১৯৮৫ সালে বার কাউন্সিলে যোগ দেন। বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি তিনি নাগপুর ও অমরাবতী মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এবং অমরাবতী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল ছিলেন। ২০০৩ সালে বম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০০৫ সালে স্থায়ী বিচারপতি হন। ২০১৯ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে উন্নীত হন।
সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় বছরে বিচারপতি গবাই প্রায় ৭০০টি বেঞ্চে অংশ নিয়েছেন, যেখানে সংবিধানিক, দেওয়ানি, ফৌজদারি, বাণিজ্যিক, শিক্ষা ও পরিবেশ আইনের মতো বিভিন্ন বিষয়ে রায় দিয়েছেন।
২০২৫এই দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে বিচারপতি গবাই শুধু নতুন অধ্যায় শুরু করেননি, বরং ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় এক অমর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বিচার বিভাগের ভবিষ্যৎ গতিপথ এখন সকলের প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দু।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version