ভারতের রণহুঙ্কার: আঘাতের জবাবে ধ্বংসের প্রতিশ্রুতি

নিউজ ডেস্ক || ভারত এখন আর পিছপা হবে না—আঘাত করলে ধ্বংস করে দেবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং মঙ্গলবার রাজধানীতে এক উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে এই কড়া বার্তা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সোমবার রাতের জোরালো ভাষণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলে এক নতুন দিশার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী এবং প্রতিরক্ষা সচিব গিরিধার আরামানে। আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অগ্রগতি, যা গত ৭ মে শুরু হয়ে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এই অভিযানের সূত্রপাত ২২ এপ্রিল পহেলগামে ২৬ নিরীহ নাগরিকের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর।

বৈঠকে ভারতের প্রতিরোধ ক্ষমতা শাণিত করা, গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার এবং দ্রুত পাল্টা আঘাতের পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে ভারত এখন প্রতিরক্ষামূলক নীতি থেকে রণকৌশলগত আগ্রাসনের পথে এগোচ্ছে। সেনাবাহিনী শুধু সীমান্ত রক্ষা নয়, আধিপত্য ও প্রতিরোধের মাধ্যমে তা নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে। সকল বাহিনীর মধ্যে সুসংহত সমন্বয় নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য।

সূত্র জানায়, এই ত্রিবাহিনী অভিযানে পাকিস্তানের ১১টি কৌশলগত এয়ার বেসে নির্ভুল হামলা চালানো হয়েছে এবং ১০০-র বেশি জঙ্গি নিকেশ করা হয়েছে। অভিযানটি অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত, যাতে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম থাকে। স্থল, জল ও আকাশপথে একযোগে পরিচালিত এই অভিযান ভারতের সামরিক শক্তি ও কৌশলগত দক্ষতার প্রমাণ।

সোমবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “যে সিঁদুর আমাদের কন্যাদের কপাল থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে, তারা এখন তার মূল্য বুঝছে।” পহেলগাম হামলাকে তিনি ভারতের আত্মার উপর আঘাত এবং জাতিকে ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত করার অপচেষ্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। “বিশ্ব দেখেছে, দেশ অনুভব করেছে, আর ভারত তার জবাব দিয়েছে,” বলেন তিনি।

রাজনাথ সিংয়ের ওয়ার-রুম স্টাইলের তদারকি এবং ত্রিবাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টা ভারতের নতুন প্রতিরক্ষা নীতির রূপরেখা তুলে ধরছে। ভবিষ্যতের যেকোনো হুমকির মোকাবিলায় ভারত এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এই বৈঠক স্পষ্ট করেছে—ভারত শুধু পাল্টা জবাব দেবে না, বরং আগ্রাসী ভঙ্গিতে শত্রুদের নির্মূল করবে।

ভারতের এই নতুন রণকৌশল শুধু সামরিক শক্তিবৃদ্ধি নয়, জাতীয় ঐক্য ও দৃঢ়তার প্রতীক। ‘অপারেশন সিঁদুর’ বিশ্বকে দেখিয়েছে, ভারত এখন আর নীরব দর্শক নয়—একটি শক্তিশালী জাতি, যে আঘাতের জবাবে ধ্বংসের ভাষা বোঝে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version