ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় বিপর্যস্ত উত্তর ভারত: দিল্লি থেকে হিমাচল, সর্তক অবস্থায় একাধিক রাজ্য

3 Min Read
নিউজ ডেস্ক || ভারতের আবহাওয়া দফতর (আইএমডি) আজ দিল্লি, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, উপকূলবর্তী অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাট, জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, ওড়িশা, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। আগামী ২-৩ দিনে কেরালা, মাহে, কোকণ, গোয়া, মধ্য মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অংশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, বিহার, গুজরাট, কর্ণাটকের অভ্যন্তরীণ অঞ্চল, মুজাফফরাবাদ, ঝাড়খণ্ড, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং তেলেঙ্গানায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে।
পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশে টানা বৃষ্টির ফলে রাবি, বিয়াস ও শতদ্রু নদীর জলস্তর বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাঞ্জাবের ফাজিলকা, গুরুদাসপুর, হোশিয়ারপুর, কপুরথলা ও ফিরোজপুর জেলার একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফাজিলকা ও গুরুদাসপুর জেলা প্রশাসন হাই অ্যালার্ট জারি করেছে এবং ২০টিরও বেশি গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফাজিলকা প্রশাসন লাউডস্পিকারের মাধ্যমে মহিলা, শিশু ও প্রবীণদের সীমান্তবর্তী পাঁচটি ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরের অনুরোধ জানিয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), সীমান্ত রক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) এবং সেনাবাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
কপুরথলার সুলতানপুর লোধিতে বিয়াস নদীর জলস্তর বৃদ্ধির ফলে ২০টিরও বেশি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হোশিয়ারপুরের মুকেরিয়ান সাবডিভিশনের একাধিক গ্রামে বন্যার জল প্রবেশ করেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় ফাজিলকা, জলন্ধর, কপুরথলা, পাঠানকোট ও গুরুদাসপুর জেলার সব স্কুল আজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাঞ্জাব জুড়ে আইএমডি ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করেছে।
হিমাচল প্রদেশেও টানা বর্ষণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। রাজ্যের সমতল অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং নদী-নালাগুলি প্লাবিত হয়েছে। আবহাওয়া দফতর কাংড়া ও চাম্বা জেলার জন্য ‘রেড অ্যালার্ট’ এবং অন্যান্য কিছু অঞ্চলের জন্য ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ জারি করেছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে কাংড়া, চাম্বা, শিমলা, হামিরপুর, সোলান, মান্ডি এবং কুল্লুর বানজার, আনি ও কুল্লু সাব-ডিভিশনে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। শিমলা আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজ্যে বৃষ্টিপাতের ধারা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
জম্মু ও কাশ্মীরের জম্মু অঞ্চলে গতকাল রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টি চলছে। জম্মু, রেয়াসি, উদমপুর, সাম্বা, কাঠুয়া ও রাজৌরি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পুঞ্চ, রামবান, ডোডা, কিশ্তোয়ার এবং কাশ্মীর উপত্যকার কিছু এলাকাতেও ভারী বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে জম্মু বিভাগের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুল দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রাখা হয়েছে।
আইএমডি জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন ভারতের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বাড়তে পারে। স্থানীয় প্রশাসন ও ত্রাণ বাহিনী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version