রবীন্দ্র ভবনের পাশে নাইট ক্লাব: ত্রিপুরার সংস্কৃতি রক্ষায় তৃণমূলের হুঁশিয়ারি

2 Min Read
নিউজ ডেস্ক || রাজধানী আগরতলার হৃদয়স্থলে অবস্থিত রবীন্দ্র ভবনের সংলগ্ন এলাকায় একটি নাইট ক্লাব খোলার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার আগরতলার তৃণমূল ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শান্তনু সাহা এই নাইট ক্লাবকে ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর আঘাত হিসেবে অভিহিত করেছেন।
শান্তনু সাহার বক্তব্য, “রবীন্দ্র ভবন কেবল একটি ভবন নয়, এটি ত্রিপুরার শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র। এখানে নিয়মিত নাটক, সংগীত, আবৃত্তি, চিত্র প্রদর্শনীর মতো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে। এমন একটি পবিত্র স্থানের পাশে নাইট ক্লাব চালু করা তরুণ প্রজন্মকে ভুল পথে পরিচালিত করার সমতুল্য। এর ফলে শহরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির শিকড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার পরিকল্পিতভাবে ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংসের চেষ্টা করছে। তাঁর মতে, রবীন্দ্র ভবনের পাশে অবস্থিত শিশুদের জন্য নির্ধারিত ‘শিশু উদ্যান’-এর নিকটে এমন একটি ক্লাব চালানো সম্পূর্ণ অনৈতিক ও সমাজবিরোধী। তিনি বলেন, “এটি শুধু সাংস্কৃতিক বিষয় নয়, এটি আমাদের পরিবার ও কচিকাঁচাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন।”
সাংবাদিক সম্মেলনে শান্তনু সাহা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবের প্রতি এই নাইট ক্লাব বন্ধ করার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটি কেবল রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রশ্ন। সব রাজনৈতিক দলের এই বিষয়ে একমত হওয়া উচিত।”
তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রশাসন ও সরকারকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে যে, যদি অবিলম্বে এই নাইট ক্লাব বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দলটি সাংস্কৃতিক সংগঠন, সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ নাগরিকদের এই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
এই বিতর্কিত নাইট ক্লাব ইস্যুতে প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে, তা নিয়ে এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র কৌতূহল তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও এই বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে আছে।
এই ঘটনা ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আগামী দিনে প্রশাসনের পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান এই ইস্যুর গতিপথ নির্ধারণ করবে।
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version