ত্রিপুরায় স্মার্ট মিটার বাতিলের দাবিতে সরব ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন
নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন (টিইসিএ) স্মার্ট মিটার বাতিল এবং বিদ্যুতের বেসরকারিকরণ বন্ধের দাবিতে সর্বভারতীয় আন্দোলনের অংশ হিসেবে ত্রিপুরায় গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শুক্রবার আগরতলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এই দাবির পক্ষে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
টিইসিএ নেতৃত্ব জানান, প্রিপেইড স্মার্ট মিটার গ্রাহকদের অর্থ লুটের একটি যন্ত্র। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার আদানি, টাটা, টরেন্টের মতো কর্পোরেট সংস্থাগুলোকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা মুনাফার সুযোগ করে দিতে এই স্মার্ট মিটার প্রকল্প চালু করেছে। ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশন লিমিটেড (টিএসইসিএল) গ্রাহকদের অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে ভয় দেখিয়ে, লাইন কাটার হুমকি দিয়ে, এমনকি বাড়ির মালিকের অনুপস্থিতিতে জোর করে স্মার্ট মিটার স্থাপন করছে।
নেতৃবৃন্দ জানান, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গ্রাহকদের তীব্র আন্দোলনের ফলে স্মার্ট মিটার স্থাপন স্থগিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারও গ্রাহকদের চাপে এই প্রকল্প বন্ধ করেছে। ত্রিপুরাতেও সরকারের কাছে স্মার্ট মিটার স্থাপন বন্ধের দাবি জানিয়েছে টিইসিএ।
এছাড়া, এসোসিয়েশন অভিযোগ করেছে, টিএসইসিএল ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত লাভজনক ছিল, কিন্তু পরিচালনাগত ত্রুটির কারণে ২০১৯-২০২০ থেকে এটি লোকসানে রূপান্তরিত হয়েছে। স্থায়ী মিটার রিডার ও লাইনম্যানদের অবসরের পর নতুন নিয়োগ না করে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ চালানো হচ্ছে, ফলে গ্রামাঞ্চলে নিয়মিত মিটার রিডিং না হওয়ায় গ্রাহকদের বিল বকেয়া পড়ছে।
টিইসিএ স্মার্ট মিটার স্থাপনের বিরুদ্ধে এবং জোরপূর্বক স্থাপিত মিটার অপসারণের জন্য আবেদনপত্র তৈরি করে গ্রাহকদের মধ্যে বিলি করার উদ্যোগ নিয়েছে। গ্রাহকদের এই আবেদনপত্র নিয়ে নির্দিষ্ট বিদ্যুৎ অফিসে জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিদ্যুৎ পরিষেবাকে বাণিজ্যিক পণ্যে রূপান্তর করে বেসরকারি সংস্থাগুলোর হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। ত্রিপুরার বিভিন্ন সাবডিভিশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ, মেরামত, ট্রান্সফরমার রক্ষণাবেক্ষণ ও বিলিংয়ের মতো কাজ ইতিমধ্যে বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়া হয়েছে।
টিইসিএ ত্রিপুরার গ্রাহকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে স্মার্ট মিটার বাতিল ও বিদ্যুতের বেসরকারিকরণ বন্ধ করা যায়।
