Studio Ghibli-এর শিল্পকর্ম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া Ghibli-স্টাইলের ছবি তৈরির প্রবণতা

By onlinenews tripura 3 Min Read

সন্তোষ পাল || Studio Ghibli, জাপানের অন্যতম প্রভাবশালী অ্যানিমেশন স্টুডিও, তার অনন্য শিল্পশৈলী এবং আবেগময় গল্প বলার ক্ষমতার জন্য বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। হায়াও মিয়াজাকি এবং ইসাও তাকাহাতার মতো কিংবদন্তি নির্মাতাদের হাতে গড়া এই স্টুডিও দীর্ঘদিন ধরে দর্শকদের মুগ্ধ করে আসছে। তাদের তৈরি “Spirited Away,” “My Neighbor Totoro,” “Princess Mononoke,” এবং “Howl’s Moving Castle”-এর মতো চলচ্চিত্রগুলি শুধুমাত্র অসাধারণ অ্যানিমেশনের জন্যই নয়, বরং হৃদয়গ্রাহী কাহিনীর জন্যও বিখ্যাত।

বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় Ghibli-স্টাইলের ছবি তৈরির প্রবণতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ডিজিটাল আর্টিস্ট এবং এআই-জেনারেটেড ইমেজ টুলগুলোর মাধ্যমে সাধারণ মানুষও নিজেদের ছবি Ghibli-স্টাইলে রূপান্তর করতে পারছে।

সম্প্রতি বিভিন্ন এআই টুল (যেমন MidJourney, Stable Diffusion, DALL·E) ব্যবহার করে শিল্পীরা নিজেদের ফটোগ্রাফকে Ghibli-স্টাইলের পেইন্টিংয়ে রূপান্তর করছে। এতে করে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত ছবি কিংবা দৈনন্দিন দৃশ্যগুলোও একটি ফ্যান্টাসি জগতের অংশ হয়ে উঠছে।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এখন chatgpt, grok beta এর মতো এআই ব্যবহার করে Ghibli তৈরি করে। ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে Ghibli-স্টাইলের ছবি এবং ভিডিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। অনেক ব্যবহারকারী তাদের নিজস্ব শহর বা গ্রামের দৃশ্য Ghibli-র মতো করে ডিজিটালি চিত্রিত করছে এবং সেই ইমেজ বা ভিডিও শেয়ার করছে। #GhibliArt, #GhibliStyle, এবং #GhibliAesthetic-এর মতো হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে হাজার হাজার পোস্ট করা হচ্ছে।

অনেক ডিজিটাল আর্টিস্ট Studio Ghibli-র রঙের প্যালেট, সফট টেক্সচার, এবং আলো-ছায়ার ব্যবহার অনুসরণ করে নিজস্ব শিল্পকর্ম তৈরি করছে। এই ধরনের শিল্পকর্ম শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় নয়, বরং NFT এবং ইলাস্ট্রেশন মার্কেটে বিক্রির জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে।

Ghibli-স্টাইলের ছবি মানুষের মনে একধরনের শান্তি এবং নস্টালজিয়ার অনুভূতি জাগায়। বর্তমান সময়ে ব্যস্ত জীবনযাত্রার মাঝে, এই ধরনের আর্টওয়ার্ক মানুষের মনে প্রশান্তি এনে দেয়, যা এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ।

Ghibli-স্টাইলের ছবি তৈরির জন্য আগে মানুষ স্থানীয় শিল্পীদের কাছে গিয়ে তাদের দক্ষতা ব্যবহার করতো। কিন্তু এখন, এআই টুলগুলোর মাধ্যমে কয়েক মিনিটের মধ্যেই সহজে এবং বিনামূল্যে এই কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে অনেক ডিজিটাল আর্টিস্ট এবং স্থানীয় শিল্পীরা কর্মসংস্থানের সংকটে পড়ছেন। যদিও এআই মানুষের সৃজনশীলতাকে সহজতর করেছে, তবুও এটি অনেক পেশাদার শিল্পীর আয়ের পথ সংকুচিত করছে।

Studio Ghibli-এর অনন্য শিল্পশৈলী যুগের পর যুগ ধরে মানুষের মনে দাগ কেটে যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় Ghibli-স্টাইলের ছবি তৈরির বর্তমান প্রবণতা প্রমাণ করে যে এই স্টুডিওর প্রভাব এখনো সমানভাবে সক্রিয়। ডিজিটাল টুল এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সাধারণ মানুষও এখন এই স্বপ্নময় জগতে নিজেদের প্রকাশ করতে পারছে, যা ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন সৃষ্টিশীলতার দুয়ার খুলে দেবে। তবে, এআই-ভিত্তিক প্রযুক্তির বিকাশের ফলে স্থানীয় শিল্পীদের কর্মসংস্থান সংকটের মুখে পড়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা জরুরি।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version